
এডিট করা আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে দিয়ে কুরুচিপূর্ণ, আশালীন ও মানহানিকর মন্তব্য করায় সাংবাদিক মুজতবা খন্দকারসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর শেহরীন আনিম ভূঁইয়া মোনামী। এতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) তিনি শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মো. জাকারিয়া, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক উম্মে সালমা এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম ঝুমা।
অধিকতর তদন্ত ও দ্রুত অপরাধীদের শনাক্তের জন্য মামলাটি ডিবির সাইবার ইউনিটে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মামলার ১ নম্বর বিবাদী (আসামি) সাংবাদিক ও এক্টিভিস্ট মুজতবা খন্দকার তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার ছবি অশালীনভাবে এডিট করে পোস্ট করেন। এতে ক্যাপশন দেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইনি, পোশাকের স্বাধীনতায় পরেছে বিকিনি’। বিবাদীর পোস্টের স্ক্রীনশট ও আইডি লিংকও যুক্ত করা হয়েছে।
২ নম্বর বিবাদী লেখক ও এক্টিভিস্ট মহিউদ্দিন মোহাম্মদ শেহরীন আনিম ভূঁইয়া মোনামীকে ‘যৌন-কল্পনার রসদ’ আখ্যা দিয়ে তার নিজের আইডিতে একটি ফটোকার্ড শেয়ার দেন। এছাড়াও সেখানে তাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, আশালীন ও মানহানিকর মন্তব্য করেন।
৩ নম্বর বিবাদী ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নীরব হোসাইন ডেইলি ক্যাম্পাস নিউজ পোর্টালের একটি ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে তাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ৪ নম্বর বিবাদী আশফাক হোসাইন ইভান তার ফেসবুক পোস্টে এডিটেড অশালীন ছবি পোস্ট করেন। এজাহারে সবার ফেসবুক আইডি ও পোস্টের স্ক্রীনশট সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাদের বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে ক্রমাগত তার ছবি এডিট করে আশালীনভাবে পোস্ট করে তাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, আশালীন ও মানহানিকর মন্তব্য করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অফিস কক্ষে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব দেখেন তিনি।
মামলা করার পর সাংবাদিকদের শেহরীন আনিম ভূঁইয়া মোনামী বলেছেন, ‘এভাবে ক্রমাগতভাবে আমার ছবি এডিট করে আশালীনভাবে পোস্ট করা এবং আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, আশালীন ও মানহানিকর মন্তব্য করার ফলে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, আমি একজন সাধারণ শিক্ষক। সেখানে আমাকে নিয়ে গত এক বছর ধরে এমন আচরণ করা হচ্ছে, যার কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। মামলাটা একদম শেষ মুহূর্তে এসে করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখনই কোনো নারী সত্যের পথে হেঁটেছে, এগিয়ে যেতে চাইছে, তখন তাকে দমানোর জন্য এমন সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট, অনলাইন বুলিং করা হয়েছে। আমি মামলাটা করেছি, এটা একটা বার্তা। অজ্ঞাতনামাও আসামি রাখা হয়েছে। যদি সামনে এমন অবস্থা তারা আবার করে তবে এই মামলায় তাদের নামও আসবে।’
মন্তব্য করুন