
ঝকঝকে দাঁত ব্যক্তিত্বকে আকর্ষণীয় করে। খানিকটা সচেতন হলেই সুস্থ-সবল দাঁতের অধিকারী হওয়া সম্ভব। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মুখের ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে শরীরের প্রদাহ বাড়াতে পারে, যা দীর্ঘ মেয়াদে হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি ডেকে আনে। চিকিৎসকদের মতে, রাতে দাঁত না মাজার অভ্যাসকে এখনই ‘না’ বলা জরুরি। কারণ যারা রাতে দাঁত মাজেন না, তাঁদের হৃদরোগ ও হার্ট ফেইলিয়ারের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
রাতে দাঁত ব্রাশ করার গুরত্ব জেনে নিন-
ডেন্টাল বিশেষজ্ঞরা বলেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত মাজা মৌলিক নিয়ম। এটি মুখের স্বাস্থ্য তো বজায় রাখেই, শরীরের রোগপ্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। দিনের বেলায় মুখে থাকা লালাগ্রন্থি থেকে যে লালা নিঃসৃত হয় সেটি ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিশে যাওয়ার ফলে মুখের এসিড হ্রাস পায়। এর ফলে দাঁত ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু রাতে লালা কম ক্ষরণ হয়। এতে করে তখন এসিড বেড়ে যায়। রাতে ব্রাশ করলে মুখে থাকা লালা সহজে বেরিয়ে যেতে পারে না। এতে করে এসিড হ্রাস সহজ হয় এবং দাঁত ভালো থাকে।
রাতে ব্রাশ করলে মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যায়। অর্থাৎ, ব্যাকটেরিয়া হ্রাস পায়। তাই মুখ থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া কমাতে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ব্রাশ করা জরুরি।
রাতে খাবারের পর খাদ্যকণা দাঁতের ফাঁকে জমে থাকতে পারে। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয়, তখন দাঁতে অ্যাসিডিক উপাদানের কারণে দাঁতের এনামেল ভেঙে গিয়ে ক্যাভিটি ও দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। তাই রাতে দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
রাতে ব্রাশ না করলে মুখে দুর্গন্ধ হয়, মাড়িতে সংক্রমণ, রক্ত পড়া ও ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। আর দাঁত না ব্রাশ করে ঘুমাতে গেলে প্লাক জমাট বেঁধে শক্ত হওয়া শুরু করে। এতে দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
শুধু ঘরোয়া যত্ন নয়, ছয় মাস পর পর দাঁতের পেশাদার পরিষ্কার বা স্কেলিং করলে মুখের গভীরের জমে থাকা ব্যাকটেরিয়াও দূর হয়।
একটু আলসেমি হয়তো স্বাভাবিক, কিন্তু প্রতিদিন রাতে মাত্র দুই মিনিটের দাঁত মাজাই আপনাকে দিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা । তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে টুথব্রাশটাকে আর অবহেলা নয়। বরং এটাই হতে পারে আপনার সবচেয়ে সহজ ‘হেলথ রিচুয়াল’।
মন্তব্য করুন