
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ২৭ আগস্ট বুধবার বিকালে বিষয়টি তদন্তে ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন তারা। খবরটি ফাঁস হবার পর থেকেই জেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে হাসপাতালের বিনামূল্যের ওষুধ বাইরে পাচার হয়। অথচ রোগীদের ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আশুতোষ সিংহের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের গুদামে বড় বড় কার্টনে মজুত রয়েছে ওষুধ যার সবগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ। বেশিরভাগ ওষুধের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের আগস্টে। কিছু এ বছরের জুনে আর কিছু দু’দিন আগে। সব মিলিয়ে মূল্য প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার ওষুধ রয়েছে।স্টোর কিপারের পদে একজন থাকলেও বাস্তবে দায়িত্ব পালন করছেন মেডিকেল টেকনিশিয়ান ও সিনিয়র স্টাফ নার্সসহ ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টোর কিপার রুপম কুমার দাস মার্চ মাসে যোগদান করলেও তাকে এখনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ গুদামে আসা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে কোনো সরকারি ডকুমেন্ট নেই।স্টোর কিপারের দায়িত্বে থাকা রাজন দে জানান, ‘তিনি মূলত একজন অ্যানেসথেসিয়া টেকনিশিয়ান, তবে স্টোরের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুমন বণিক বলেন, আগের তত্ত্বাবধায়ক বদলি হওয়ায় আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি এখন। ওষুধগুলো অনেক আগে কেনা হয়েছিল।সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বিষ্ণু প্রসাদ চন্দ জানান, এত বিপুল পরিমাণ ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া অস্বাভাবিক। স্টোর কিপার বলেছে এসব ওষুধের কোনো ডকুমেন্ট নেই।
আবু হুরায়রা নামে একজন বলেন, ডাক্তার স্যালাইন দিতে বলেছে, তাই এখানে এসছি। কিন্তু হাসপাতালের লোক বলেছে নেই, বাইরে থেকে কিনতে হবে। নির্দেশনা থাকলে রোগীদের কাজে লাগতো। নষ্ট হতো না।
সদ্য বদলি হওয়া তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি মে মাসে যোগদানের সময় এসব ওষুধ বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়ার আগেই আমার বদলির আদেশ হয়। অন্যদিকে আগের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
মন্তব্য করুন